আন্তর্জাতিক ডেস্ক : জার্মানিতে মহাজোট সরকার গঠনের সম্ভাবনা খতিয়ে দেখতে আলোচনা শুরুর আগেই দুই শিবিরে তর্জনগর্জন পরিবেশকে বিষিয়ে তুলেছে। এই অবস্থায় ঐকমত্যে আসা প্রায় অসম্ভব বলেই মনে করছেন পর্যবেক্ষকরা। প্রশ্ন করছেন, অসম্ভবকে কি সম্ভব করতে পারবেন চ্যান্সেলর আঙ্গেলা ম্যার্কেল ? এসব প্রশ্নের জবাব খুঁজেছে জার্মান বেতার ডয়চে ভেলে।
জার্মানিতে নির্বাচনের অস্পষ্ট ফলাফলের পর একাধিক বাধা অতিক্রম করে যখন সরকার গঠনের সম্ভাবনা উজ্জ্বল হয়ে উঠছে, তখনই আবার নতুন করে উত্তেজনা দেখা দিচ্ছে। গত সপ্তাহেই মহাজোট সরকার গঠনের সম্ভাবনা স্বীকার করেছে এসপিডি দল, যদিও তারা সংখ্যালঘু সরকারের প্রতি সমর্থন বা নতুন নির্বাচনের সম্ভাবনাও উড়িয়ে দিচ্ছে না। ইউনিয়ন শিবিরের উপর চাপ বাড়াতে তারা বেশ কিছু শর্তও দিয়েছিল।
এদিকে আগামী বুধবার দুই পক্ষের মধ্যে প্রথম সাক্ষাৎ হওয়ার কথা। এমনকি দ্বিতীয় একটি বৈঠকের সম্ভাবনা নিয়েও আলোচনা হচ্ছে। এরই মধ্যে ম্যার্কেলের ইউনিয়ন শিবিরের বেশ কয়েকজন নেতা এসপিডি দলের প্রধান শর্তগুলো পুরোপুরি খারিজ করে দিয়েছেন। বিশেষ করে স্বাস্থ্যবীমার ক্ষেত্রে সার্বজনীন ও বেসরকারি ব্যবস্থার বিভাজন ঘুচিয়ে নতুন কাঠামো গড়ে তোলার দাবি মানতে নারাজ সিডিইউ ও সিএসইউ দল। ইউরোপীয় যুক্তরাষ্ট্র গড়ে তোলার লক্ষ্যে এসপিডি দলের স্বপ্নও তাদের পছন্দ নয়।
দলের একাংশের এই অবস্থান নিয়ে ম্যার্কেল গভীর দুশ্চিন্তায় পড়েছেন। একাধিক আন্তর্জাতিক সংকটের মোকাবিলা করতে জার্মানির সক্রিয় ভূমিকার প্রয়োজন। অথচ কার্যনির্বাহী সরকারের প্রধান হিসেবে এই মুহূর্তে তাঁর হাত-পা বাঁধা। তাই দ্রুত মহাজোট সরকার গঠন করে তিনি আবার কাজ শুরু করে দিতে চান। সংখ্যালঘু সরকার গড়ে দুর্বলতা রাখতে চান না তিনি। নতুন নির্বাচন হলে এএফডি দলের শক্তি বৃদ্ধির আশঙ্কাও তাঁকে দুশ্চিন্তায় রেখেছে। অতএব এসপিডি দল ছাড়া গতি নেই৷
বড়দিন ও নতুন বছরের ছুটির আগে কোনোরকম অগ্রগতির আশা করা যাচ্ছে না। বুধবারের আলোচনার ফলাফলের ভিত্তিতে নতুন বছরে পরবর্তী পদক্ষেপ স্থির হবে। ফলে আসন্ন ইউরোপীয় ইউনিয়নের গুরুত্বপূর্ণ শীর্ষ সম্মেলনে ম্যার্কেল বেশ অসহায় অবস্থায় থাকবেন। এসপিডি দল যেভাবে ফ্রান্সের প্রেসিডেন্ট এমানুয়েল মাক্রোঁর অনেক প্রস্তাবের প্রতি সমর্থন দেখাচ্ছে, নিজের শিবির সে সব বিষয়ে সংশয় দেখানোর ফলে ম্যার্কেল অস্বস্তিতে পড়েছেন।